রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
দিরাইয়ে পূর্বাঞ্চলের সাথে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম কালনী ব্রিজ থেকে চান্দপুর-করিমপুর-মাটিয়াপুর হয়ে জগদল যাওয়ার যে রাস্তাটি রয়েছে, বর্তমানে সেটি এখনও ব্যক্তি মালিকানাধীন থাকায় এই রাস্তা সংস্কার করে যাতায়াতের সুবিধার্থে গত ১৫ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে দিরাই হতে জগদল ও পূর্বাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়। এজন্য এই চারগ্রামের লোকজন স্বেচ্ছায় প্রায় দুই লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে রাস্তাটি চলাচলের জন্য উপযোগি করে তোলেন। এরপর থেকে রাস্তার অন্যান্য কাজ করতে টোকেনের মাধ্যমে রাস্তায় চলাচলকৃত যানবাহন থেকে টাকা সংগ্রহ করলে এ নিয়ে ৭ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকসহ বেশ কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় ‘চাঁদাবাজি’ উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সংবাদে দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সোহেল আহমদ, জগদল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান লাল মিয়া, করিমপুর গ্রামের শাহিনূর আলম রুবেল এবং চান্দপুর গ্রামের বাবুলাল দাশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়। ‘চাঁদাবাজির ঘটনাটি আদৌ সত্য নয়’ উল্লেখ করে ৯ মার্চ সোমবার বিকেল তিনটায় দিরাই বাজারের একটি সংগঠনের অফিসে উক্ত চারগ্রামের উদ্যোগে এক সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন করিমপুর গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বী আব্দুর রশিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জগদল গ্রামের আব্দুল মতিন, দুলাল আহমদ, কবির মিয়া, আব্দুস সুবহান মাস্টার, আব্দুল হাই, নানু মিয়া, মাটিয়াপুর গ্রামের ফয়জুল মিয়া, সুজাত আহমদ চৌধুরী, আব্দুর রহিম, করিমপুর গ্রামের আলা মিয়া, শামসুল ইসলাম, চান্দপুর গ্রামের রঞ্জিত দাস, জড়বাবু, বাবুলাল দাস, নিখিল দাস, রজেন্দ্র দাস, রাজনাও গ্রামের স্বাধীন চৌধুরী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে দাবী করা হয়, দিরাই কালনী ব্রীজ হতে জগদল বাজার পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য চাঁন্দপুর, করিমপুর, মাটিয়াপুর ও জগদল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের উদ্যোগে দুই লক্ষ টাকা স্বেচ্ছায় অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে কাঁচা রাস্তা হালকা গাড়ি চলাচলের উপযোগী করে বিগত ২৫শে জানুয়ারী তারিখে রাস্তা চালু করা হয় এবং বর্তমানে এলাকাবাসী এর সুবিধা পাচ্ছে। আমরা এলাকাবাসী ব্যক্তি-মালিকাধীন জমির উপর দিয়ে এই রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে জমি লিজ নিয়ে এ রাস্তা সংস্কার করতে টাকা ব্যয় করতে হয়। অদ্যাবধি এই কাঁচা রাস্তা মেরামতের জন্য নিয়মিত টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে, যা উক্ত রাস্তার উপর দিয়ে চলাচলরত ব্যবসায়ীক যানবাহনগুলো নিজ ইচ্ছায় নির্ধারিত হারে দিয়ে আসছে। যার হিসাব কমিটির কাছে স্বচ্ছতার সাথে সংরক্ষন করা হয় এবং চলাচলরত যানবাহনগুলোর মতামত অনুযায়ী ব্যয় হয়।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, বিগত ৭ই মার্চ তারিখে দৈনিক যুগান্তরসহ কিছু স্থানীয় অনলাইন পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধিগন উক্ত রাস্তা সংস্কার কমিটির সদস্য এবং দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সোহেল আহমদ, সাবেক ইউ/পি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান লাল মিয়া, শাহিনূর আলম রুবেল এবং বাবুলাল দাশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। আমরা এলাকাবাসী এরূপ ঘৃণ্য কুরুচিপূর্ণ ডাহা মিথ্যা সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উল্লেখ করা হয়, আমরা এলকাবাসী স্ব-উদ্যোগে এরূপ রাস্তা চালু করায় এলাকার জনগণ খুবই আনন্দিত এবং কেহই এর কোনোরূপ বিরোধিতা করেনি। কিন্তু জীবন সূত্রধর নামে এক বখাটে ভবঘুরে লোকের উক্তি দিয়ে এ ধরণের মিথ্যা সংবাদ প্রচার করায় এলাকাবাসী খুবই মর্মাহত। এ রকম মিথ্যা সংবাদের মাধ্যমে জনস্বার্থে উদ্যোগী জনগণকে নিরুৎসাহিত করে উন্নয়নমূলক কাজ থেকে দূরে রাখবে ছাড়া সম্পৃক্ত করতে পারবে বলে বিশ্বাস করি না। আমরা মনে করি, দিরাইয়ের কিছু সাংবাদিক হলুদ সাংবাদিকতার মাধ্যমে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তির চরিত্রের উপর কালীমা লেপন করে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলে তৎপর। এরূপ সংবাদ প্রকাশের কারণে আমরা এলাকাবাসী খুবই সংক্ষুদ্ধ এবং মানহানিকর বলে মনে করি।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, আপনারা প্রকৃত ঘটনা অনুসন্ধান করে বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশন করে সাংবাদিকতার মহান পেশাকে আরো সমুন্নত করবেন বলে বিশ্বাস করি। পরিশেষে এই আহ্বান করি যে, এরূপ ঘৃণিত সংবাদের প্রতিবাদ সংশ্লিষ্ট প্রকাশিত পত্রিকায় ভূল স্বীকারের মাধ্যমে ছাপিয়ে এলকাবাসীর ক্ষোভ নিরসন করবেন বলে আশা করি।
এক প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, প্রশাসনের পরামর্শে আপাতত টোকেন দিয়ে কোন ধরণের টাকা নেয়া হচ্ছে না। এছাড়া এলাকার স্বার্থের পরিপন্থী কিছু করা হবে না।